ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কের ইতি ঘটতে যাচ্ছে ব্যাংকটির অন্যতম করপোরেট উদ্যোক্তা দুবাই ইসলামীক ব্যাংকের। কয়েক দফায় বিক্রির পর হাতে থাকা ইসলামী ব্যাংকের ১ লাখ শেয়ারও বিক্রি করে দিচ্ছে তারা।
সোমবার শেয়ার বিক্রির এ ঘোষণা দিয়েছে ব্যাংকটি। শেয়ার বিক্রি শেষ হলে ৩ দশকেরও বেশী সময় ধরে ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে দুবাই ইসলামীক ব্যাংকের সম্পর্কের ইতি ঘটবে।
জানা গেছে, ১৯৮৩ সালে ইসলামী ব্যাংকের প্রতিষ্ঠালগ্নে এটির উদ্যোক্তা হিসেবে যুক্ত হয়েছিল দুবাই ইসলামীক ব্যাংক। ওই বছরে ৬৮১টি শেয়ার কিনে উদ্যোক্তা হিসেবে যুক্ত হয় ব্যাংকটি। পরবর্তী সময়ে ১৯৯০, ১৯৯৬, ২০০০ ও ২০০৩ সালে রাইট শেয়ার ক্রয় ও বোনাস লভ্যাংশ পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের পরিমাণ বা বিনিয়োগ বেড়ে যায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটের তথ্যে দেখা যায়, ২০১৪ সালের আগস্ট মাস থেকে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি শুরু করে দুবাই ইসলামীক ব্যাংক। ওই সময় ইসলামী ব্যাংকের ১ কোটি ৩৭ লাখ ৩ হাজার ৫৪০টি শেয়ার ছিল সেই ব্যাংকটির হাতে। ওই বছরের ১১ আগস্ট ৪০ লাখ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দেয় দুবাই ইসলামীক ব্যাংক। সেপ্টেম্বরের ৯ তারিখে ৪০ লাখ শেয়ার বিক্রি শেষ হয়েছে বলে ব্যাংকটির পক্ষ থেকে জানানো হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর আরও ৩০ লাখ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দেয় করপোরেট উদ্যোক্তাটি। ১ অক্টোবর ৩০ লাখ শেয়ার বিক্রয় শেষ হয়েছে বলে জানানো হয়। এরপর চলতি বছরের ১০ আগস্ট ৩৭ লাখ ৩ হাজার ৫৪০টি শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দেওয়া হয় এবং ২০ আগস্টের মধ্যে ঘোষিত শেয়ার বিক্রি শেষ হয়েছে বলে জানানো হয়। এরপর হাতে থাকা ৩০ লাখ শেয়ারের মধ্যে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের ৭ তারিখে ২৯ লাখ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দেয় দুবাই ইসলামীক ব্যাংক। ঘোষণা দেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে শেয়ার বিক্রি শেষ হয়।
সর্বশেষ হাতে থাকা বাকি ১ লাখ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে দুবাই ইসলামীক ব্যাংক। আগামী ২৯ অক্টোবরের মধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বাজার দরে শেয়ার বিক্রি করবে তারা। সোমবার দিনের শুরুতে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর ছিল ২৮.৯ টাকা। বেলা সোয়া ১২টায় ০.২ টাকা কমে ব্যাংকটির শেয়ার ২৮.৭০ টাকায় লেনদেন হচ্ছিল।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৬১০ কোটি টাকা, যা প্রায় ১৬১ কোটি শেয়ারে বিভক্ত। মোট শেয়ারের মধ্যে ৫৮.৩৭ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তাদের হাতে। সাধারণ শেয়ারধারীদের হাতে রয়েছে ২০.৬৮ শতাংশ এবং দেশী-বিদেশী ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর হাতে রয়েছে বাকি ২১ শতাংশ শেয়ার।
ইসলামী ব্যাংকের বিদেশী উদ্যোক্তাদের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরবের ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, কুয়েত ফিন্যান্স হাউস, জর্ডান ইসলামিক ব্যাংক, কাতারের ইসলামিক ইনভেস্টমেন্ট এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ করপোরেশন, বাহরাইন ইসলামিক ব্যাংকসহ আরও বেশকিছু সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
১৯৮৫ সালে ইসলামী ব্যাংক শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।